মুশকিল হল যে আমি কোনোকিছুতেই ঠিক ভালো নই। তাই, ইংরেজি ভাষায় ছড়ানোর থেকে, মাতৃভাষায় ছড়ানোটা শ্রেয় বোধ করি - অন্তত, পড়ার পর, লোকের দেওয়া বাংলা গালাগালিগুলো বুঝতে অসুবিধা হবে না!
-
বুরু-ডোঙ্গরীর দেশে
ঠিক পূজোর মধ্যেই পালাবো ভেবেছিলাম। ব্যাগ গুছোনো, সাইকেল রেডি, উত্তেজনায় পেট গুড়গুড়ও করছে। সপ্তমীর ভোরের প্ল্যান পুরো ছকে বাঁধা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা ন্যাশনাল হাইওয়ে ধরে বর্ধমান হয়ে, দুর্গাপুর পেরিয়ে, পুরুলিয়ার রাস্তা – হাওয়া আর গণ্ডায় গণ্ডায় চা খেতে খেতে। বাধ সাধলো পেট! পোকামাকড় ঢুকেছিলো নিঘঘাত, একেবারে পেড়ে ফেললো, ঠিক ষষ্ঠীর রাত থেকে! ব্যাস! পুরো…
-
সন্ধিক্ষণ
ঘুমটা কাঁচাই ভাঙলো নন্দীশের! চটকা ভাঙলে যা হয়, খানিক ঠাহর করার চেষ্টা করলো নন্দীশ, পারিপার্শ্বিক। ততক্ষণে চ্যাঁ চ্যাঁ করে আবার বেজে উঠেছে কলিং বেলটা। ওহ, টেনিদা সমগ্র পড়তে পড়তে কখন যে চোখ লেগে গেছিলো, বুঝতেই পারেনি নন্দীশ। বুকের উপর থেকে খাটে পড়ে যাওয়া বইটা পাশের টেবিলে সরিয়ে রেখে খাটের পাশের দিকে পা ঝুলিয়ে উঠে বসলো…
-
কথপোকথন
আজ খুব মটকা গরম হয়ে গিয়ে ঘুমটা ভাঙ্গলো সকাল ৭ টার সময়।উঠে বুঝলাম ব্যাপারটা।ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী দুটো আবার কথা শুরু করেছে!!বুঝলেন না তো?আরে কিছু না, আমাদের বাড়ীতে দুটো মুখোশ আছে। তারা খাটের পাশের দেওয়ালে ঝুলে থাকে।সেটা সমস্যা নয়। মুশকিল হল যে তারা মাঝে-মধ্যেই নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে।একটু ভড়কে গেলেন কি?আপনার কোন দোষ নেই।ব্যাপারটা খোলসা করতে দিন।অনেকদিন আগের…
-
অরুণোদয়
অরুণ অনেকদিন পর ভোরবেলা দৌড়তে গেছিলো।এখন তো রাস্তাঘাট ফাঁকাই থাকে। ইতিউতি লোকজন বাঁচিয়ে, কিলো ছয়েক দৌড়ে ফিরে অরুণ সবে দম নিচ্ছিলো বাড়ির গলির সামনে দাঁড়িয়ে।এমনি সময়ে পাড়ার কুকুরগুলো ল্যাজ নাড়িয়ে ছুটে এলো।না, অরুণের দিকে নয়।রাস্তার ওপারে, কিছুটা দুরে বসে থাকা এক মহিলার দিকে।অবিন্যস্ত চুল, অনেকদিনের না ধোয়া। গায়ে একটা ময়লা কালচে-সবজেটে জামা, আর তার উপর…
-
ফোনবুক
সেন্টার টেবিলের উপর রাখা ফোনটার দিকে আরেকবার তাকালেন অমিয়বাবু। বারান্দা থেকে সকালের হালকা আলো এসে পড়েছে ফোনটার উপর। গত সপ্তাহ অবধি বলেছে নম্বরটা সুইচড অফ। অমিয়বাবুর কলেজের বন্ধু, তমালের। এর আগে শেষ এরকম হয়েছিল স্কুলের বন্ধু অসীমের ক্ষেত্রে, প্রায় মাসখানেক অপেক্ষা করতে হয়েছিল! আর ভাস্করের জন্যে, দিন দশেক। ভাস্করের ছেলে বাপের মতই নিয়মনিষ্ঠ, কাজ ফেলে রাখত…
-
নাচুনে
নাচতে আমি একদমই পারিনে। গাইতে পারিনে, বাজাতেও নয়, তবে শুনতে আমার মন্দ লাগেনা সেরকম। তাই, গানবাজ না হলেও, গানবাজনা টা আমার ভালোই লাগে। সেদিন, গাড়ী চালাচ্ছিলুম, রাস্তা দিয়ে, গড়গড়িয়ে। গাড়ীর ধর্মই গড়ানো, তাই আমি আপত্তি করিনিকো। কিন্তু, কানে কোনো গান না আসলে, আমার বড় আপত্তি হয়। আজকাল চাইলে গাড়ীতেই গান শোনা যায়। মজলিশী না হলেও, রাস্তাতে সময়টা…